(۸) وَمَا نَقَمُوا مِنْهُمْ إِلَّآ أَن يُؤْمِنُوا بِالله الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ ـــ
(۹) الَّذِى لَهُ مُلْكُ السَّمـوتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ عَلى كُلِّ شَىْء شَهِيدٌ ـــ
(١٠) إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنٰتِ ثُمَّ لَمْ يَتُوبُواافَلَهُمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَلَهُمْ عَذَابُ الْحَرِيقِ ـــ
(١١) إِنَّ الَّذِينَ امَنُوا وَعَمِلُوا الصَّـٰلِحٰتِ لَهُمْ جَنّتٌ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا الْأَنْهرُ ۚ ذلِكَ الْفَوْزُ الْكَبِيرُ ـــ
(١۲) إِنَّ بَطْشَ رَبِّكَ لَشَدِيدٌ ـــ
(١٣) إِنَّه هُوَ يُبْدِئُ وَيُعِيدُ ـــ
(١٤) وَهُوَ الْغَفُورُ الْوَدُودُ ـــ
(١٥) ذُو الْعَرْشِ الْمَجِيدُ ـــ
(١٦)فَعَّال لِّمَا يُرِيدُ ـــ
(١٧) هَلْ أَتكَ حَدِيثُ الْجُنُودِ ـــ
(١٨)فِرْعَوْنَ وَثَمُودَ ـــ
(١٩) بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا فِى تَكْذِيبٍ ـــ
(۲٠) وَاللَّهُ مِن وَرَآئِهِم مُّحِيطٌۢ ـــ
(۲١) بَلْ هُوَ قُرْأن مَّجِيد ـــ
(۲۲) فِى لَوْحٍۢ مَّحْفُوظ ــــ
তরজমা :
(৮) তারা (কাফিররা) তাদেরকে (মুমিনদেরকে) শুধু এ কারণেই শাস্তি প্রদান করেছে যে, তারা (মুমিনরা) পরাক্রমশালী ও প্রশংসিত আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে।
(৯) আসমান-যমীনের রাজত্ব যার, আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী।
(১০) নিশ্চয় যারা ঈমানদার নর-নারীদেরকে কষ্ট দিয়েছে, অতঃপর তাওবা করেনি, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি এবং রয়েছে ছানেকারী (অপ্রিয়) শাস্তি।
(১১) নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। উহাই মহাসফলতা।
(১২) নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও কঠিন।
(১৩) তিনিই প্রথমবার (সৃষ্টি) করেন এবং পুনরায় (সৃষ্টি) করেন।
(১৪) আর তিনিই ক্ষমাশীল ও পরম স্নেহপরায়ণ।
(১৫) আরশের মালিক ও মহান।
(১৬) তিনি যা ইচ্ছা তা করেন।
(১৭) আপনার নিকট কি সেনাদলসমূহের কাহিনী পৌঁছেছে?
(১৮) ফিরআউন ও সামূদের
(১৯) বরং কাফিররা মিথ্যাচারে লিপ্ত।
(২০) আর আল্লাহ তাদেরকে চতুর্দিক থেকে পরিবেষ্টন করে আছেন।
(২১) বরং তা সম্মানিত কুরআন।
(২২) সংরক্ষিত ফলকে রয়েছে।
আসহাবুল উখদূদের ঘটনা (গত সংখ্যায় প্রকাশিত অংশের অবশিষ্টটুকু)
যখন বালকটি তার প্রতিপালকের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দিল, তখন উপস্থিত সকলেই একসাথে বলে উঠল-
امنا برب الغلام
অর্থ : আমরা বালকটির প্রতিপালকের উপর ঈমান আনলাম।
তখন বাদশার সভাসদবর্গ বলতে লাগল-আগে তো হাতেগোনা কয়েকজন মুসলমান ছিল, অথচ এখন সবাই ইসলাম গ্রহণ করে ফেলল। তখন বাদশাহ তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল। আর নির্দেশ দিল- বড় বড় গর্ত খনন করে তাতে আগুন জ্বলাতে। বাদশার নির্দেশে গর্তে আগুন জ¦ালিয়ে সবাইকে আগুনে নিক্ষেপ করা হতে থাকল। একজন মুসলিম মহিলা কোলে বাচ্চা নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দিতে ইচ্ছা করলে বাচ্চাটির যবান খুলে যায়। সে বলে ওঠে-
اماه ـــ صبرى فل على الحق
‘মা, ধৈর্যধারণ করো। ভয় পেয়ো না। কারণ, তুমি সত্য ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত আছ।
লক্ষণীয় তিনটি বিষয়
(১) উখদূদ সম্প্রদায় যেভাবে আল্লাহর আযাবে ধ্বংস হয়েছিল মক্কার কাফিররাও সে আযাবের সম্মুখীন হবে, মুসলমানদেরকে যুলুম-নির্যাতন করার কারণে।
(২) তৎকালের ঈমানদাররা যেভাবে ঈমান, ইখলাসের উপর অটল-অবিচল থেকে উত্তপ্ত আগুনে ঝাঁপ দিয়েও ঈমানের মতো মহামূল্যবান সম্পদের হেফাজত করেছিলেন, বর্তমান সময়ের মুমিনদেরও কর্তব্য হলো কোনো কঠিন থেকে কঠিনতর পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে ঈমান-ইসলাম থেকে একচুল পরিমাণও বিচ্যুত না করা।
(৩) যে মহান রাব্বুল আলামীনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের কারণে কাফিররা ক্রুদ্ধ ও রাগান্বিত হয়েছে, সেই মহান সত্তা রাজাধিরাজ আল্লাহ উভয় পক্ষের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করছেন। অতএব কাফিররা তাদের কুকীর্তির শাস্তি স্বরূপ চিরস্থায়ী অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হবে এমনকি দুনিয়াতেও সেই প্রজ্জ্বলিত আগুনের শিখায় ভস্মিত হয়েছে। পক্ষান্তরে মুমিনরা তাদের ঈমানের উপর অটল-অবিচল থাকলে তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।
মহান প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তাওবার ঘোষণা
যালিমরা তাদের যুলুমের চূড়ান্ত সীমায় উপনীত হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদেরকে তাওবার পথে ফিরে আসার আহ্বান করছেন। এটা মহান রাব্বুল আলামীনের দয়া এবং অনুগ্রহের প্রমাণ। পাপিষ্ঠরা আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দাদেরকে অগ্নিদগ্ধ করেছে, তারপরও আল্লাহ তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, (অতঃপর তারা তওবা করেছে), এ আহ্বান শুধু উখদুদ সম্প্রদায়ের জন্য নয়। বরং কিয়ামত পর্যন্ত আগত পাপীষ্ঠরাও এ নিয়ামাত লাভে ধন্য হতে পারবে।