ছয় মঞ্জিল প্রসঙ্গ : আলমে আজসাদ বা দুনিয়ার জগত (১৪তম পর্ব)

ঐক্যে স্থায়িত্ব আসার মাধ্যম

ঐক্যে স্থায়িত্ব আসার বড় মাধ্যম হলো পারস্পরিক সহানুভূতি প্রকাশ ও সহযোগিতা প্রদান করা। আরবিতে যেটাকে বলা হয় ‘তাআউন’।

সূরা মায়িদার দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন—

“নেকী ও পরহেযগারীতে তোমরা একে অপরের সহযোগিতা করতে থাকো।”[1]

তাকওয়া, ঐক্য, তাআউন, হামদর্দী (নিজের প্রয়োজন পেছনে রেখে অপর ভাইয়ের প্রয়োজন মিটিয়ে দেওয়া)- এসব সুন্দর গুণাবলির অধিকারী ছিলেন সাহাবায়ে কেরাম। তাই তো এসব সুন্দর মানুষের দিকে তাকিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করতেন, ‘তোমাদের আমলের উপর আল্লাহ তাআলা হেসে দিয়েছেন, খুশি হয়েছেন।’

কুরআনুল কারীম সাহাবায়ে কেরামের সহানুভূতির এ গুণ বয়ান করতে ইরশাদ হয়েছে—

“তাঁরা নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল।”[2]

তিরমিযী শরীফের হাদীস- নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আমার সাহাবীদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করো। আমার পর তাদেরকে নিন্দা ও দোষারোপের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত কোরো না। কেননা, যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালোবাসে, আমার ভালোবাসার কারণেই সে তাদেরকে ভালোবাসল, আর যে ব্যক্তি তাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখে, আমার প্রতি বিদ্বেষ রাখার কারণেই সে তাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখল। যে তাদেরকে কষ্ট দেয়, বস্তুত সে আমাকে কষ্ট দিল, আর যে আমাকে কষ্ট দিল, বস্তুত সে আল্লাহ তাআলাকে কষ্ট দিল, আর যে আল্লাহ তাআলাকে কষ্ট দিল, অচিরেই আল্লাহ পাক তাকে আযাবের মাধ্যমে গ্রেফতার করবেন।’

সুতরাং, সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। কোনোভাবেই তাঁদের সম্পর্কে বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব রাখা যাবে না। বিন্দুমাত্র সমালোচনাও করা যাবে না। তাঁরা হলেন তারকাতুল্য। নবীয়ে পাক ইরশাদ করেছেন, ‘আমার সাহাবীরা হলেন তারকাসমূহের মতো। তোমরা তাঁদের যে-কারও অনুসরণ করলে হিদায়াত পেয়ে যাবে।’

তাঁরা হলেন, মি‘য়ারে হক, সত্যের মাপকাঠি। তাঁদের নিয়ে সমালোচনা করে মুসলিম সমাজে অনৈক্য ও বিভাজনকে যারা উস্কে দিতে চায়, তাদের থেকেও আমরা সাবধানতা অবলম্বন করব।

সাহাবায়ে কেরাম একজন অপরজনের সঙ্গে তাআউনের সম্পর্ক রাখতেন। পারস্পরিক সহানভূতি ও সহযোগিতায় তাঁরা হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ।

আসুন, আমরা তাঁদের অনুসারী হই। তাঁদের মতোই তাকওয়া, ঐক্য, তাআউন ও হামদর্দীর গুণে গুণান্বিত হয়ে ইহজীবনের এই মানযিল সমাপ্ত করি। তাহলে মানবজীবনের ছয় মানযিলের চতুর্থ মানযিলের সফর আমাদের জন্য আরামদায়ক ও নিরাপদ হয়ে উঠবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন।

[1] সূরা মায়িদা : ২

[2] সূরা ফাতাহ : ২৯

সত্য ও সুন্দরের প্রহরায় ৪৮ বছর

প্রতিষ্ঠাতা : শায়খ আল্লামা লুৎফুর রহমান বর্ণভী রহ.
নিবন্ধন নম্বর : চ-৪৭৩/০৫

সত্য ও সুন্দরের প্রহরায় ৪৮ বছর

প্রতিষ্ঠাতা : শায়খ আল্লামা লুৎফুর রহমান বর্ণভী রহ.
নিবন্ধন নম্বর : চ-৪৭৩/০৫

কপিরাইট © ২০২৪ | মাসিক হেফাজতে ইসলাম, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলামের মুখপত্র। Developed By Shabaka IT