মেটাবলিক সিন্ড্রোম কোনো এক রোগ নয়, অনেকগুলো রোগের সমাহার। এ সিন্ড্রোমে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এই তিন রোগের কোনো একটির ঝুঁকি যখন বাড়তে থাকে, তখন আপনি মেটাবলিক সিন্ড্রোমের (Metabolic syndrome) শিকার। এ সিন্ড্রোম উচ্চ রক্তচাপ তৈরি করে। এ সিন্ড্রোম কোমরের মেদকে বাড়িয়ে দেয়। এ সিন্ড্রোমের ফলে রক্তে শর্করার মাত্রাধিক্য হয় অর্থাৎ ডায়াবেটিসের প্রবণতা খুব বেড়ে যায়। একগুচ্ছ আপাত নির্দোষ অসুস্থতার হাত ধরে আসে আচমকা হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যা। মেটাবলিক সিন্ড্রোম মানুষের রক্তে এক ধরনের চর্বি বা লিপিড তৈরি করে, শরীরেও তৈরি করে সবচেয়ে সাধারণ ধরনের চর্বি, যাকে বলে ট্রাইগ্লিসারাইড। এটি শরীরে তৈরি করে নানা জটিলতা। এর জন্ম হয় আমাদের শরীরে প্রয়োজনের অধিক ক্যালোরি থাকার কারণে। উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড শরীরের জন্য ক্ষতি বয়ে আনে। কারণ তারা ধমনীগুলিকে শক্ত বা ঘন করতে অবদান রাখতে পারে, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এর উচ্চতর মাত্রা প্রায়ই ডেকে আনে উচ্চ রক্তচাপ, স্থুলতা, ডায়াবেটিস, ভালো কোলেস্টেরলের নিম্নস্তর এবং খারাপ কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রার মতো অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ (ঘওঐ) দেখিয়েছে- মেটাবলিক সিন্ড্রোমের মাত্রা কীভাবে ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ২০২১ সালে দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্টে্রর ৩৪% মানুষ এই সিন্ড্রোমে ভুগছেন।
মেটাবলিক সিন্ড্রোমের জন্য প্রধাণত দায়ী দ্রুত খাওয়া। বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিশ্চিত করেছে দ্রুত খাবার ফলে লিভার ও অগ্নাশয়েও নানা রোগ জন্ম নেয়। এমনকি দ্রুত খাবার ফলে ব্লাড সুগারের ওঠানামা বেড়ে যায়। হাইপারটেনশন অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়, হাইপার ট্রাই গ্লিসারাসাইডিমিয়া, অর্থাৎ রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যায়, ইমপেয়ার্ড গ্লুকোজ টলারেন্স অর্থাৎ রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি কিন্তু ডায়াবেটিস নয় এবং রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি হয়। এই সব ডিজিজ পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ ও স্ট্রোক ডেকে আনে। এনআইএইচ জানিয়েছে উদ্বেগের বার্তা। সেটা হলো হৃদরোগের ঝুঁকির ক্ষেত্রে ধুমপান যতটা বিপজ্জনক, ভবিষ্যতে মেটাবলিক সিন্ড্রোম এর চেয়েও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
বিষয়টি উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। গবেষণা পরিচালনা করেছেন ডক্টর তাকায়ুকি ইয়ামাজি। তিনি জাপানের ইউনিভার্সিটি অব হিরোশিমার হৃদরোগ স্পেশালিস্ট। অসবৎরপধহ American Heart Association’s-এর Scientific Sessions-এ উপস্থাপিত হয় তাঁর গবেষণা। এতে স্থুলতার মতো জটিল পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাবার পেছেনে স্পষ্টত দায়ী করা হয় দ্রুত খাবারকে।
ডক্টর ইয়ামাজির গবেষণায় যুক্ত ছিলেন একদল স্পেশালিস্ট। ২০০৮ সালে শুরু হয় এই গবেষণা। সমাপ্ত হয় ২০১৪ সালে। তারা ১,০৮৩ ব্যক্তির উপর ৫ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালান। এদের মধ্যে ৬৪২ জন ছিলেন পুরুষ, ৪৪১ জন মহিলা। তাঁদের গড় বয়স ছিল ৫১ বছরের কিছু বেশি। গবেষণায় তারা দেখার চেষ্টা করেন মেটাবলিক সিন্ড্রোমের পেছনে খাওয়ার গতি দায়ী কি না! যাঁদের নিয়ে গবেষণা করা হয়, তাঁরা ২০০৮ সালে মেটাবলিক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ছিলেন না। তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় তাঁদের খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, জীবনধারা ও মেডিক্যাল ইতিহাসের তথ্য। খাদ্যগ্রহণের গতির ভিত্তিতে তাদেরকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। ক. ধীরে খাদ্য গ্রহণকারী। খ. স্বাভাবিক গতিতে খাদ্যগ্রহণকারী। গ. দ্রুত খাদ্য গ্রহণকারী।
৫ বছরের মধ্যে দেখা গেল ৮৪ জন ব্যক্তি মেটাবলিক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। তাঁরা মূলত ছিলেন দ্রুত খাদ্য গ্রহণকারী। ফলে বাস্তব অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত হয়- এ সিন্ড্রোমের জন্য দ্রুত খাদ্যগ্রহণ মূলত দায়ী। খাদ্যগ্রহণে যাঁদের গতি ধীর, তাঁদের তুলনায় দ্রুত গতির খাদ্যগ্রহণকারীরা এ সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হবার ঝুঁকিতে থাকেন দ্বিগুণ মাত্রায়। গবেষকরা নিশ্চিত করেন- দ্রুত খাদ্য গ্রহনকারীদের মেটাবলিক সিন্ড্রোমের ঝুঁকি ১১.৬% এবং স্বাভাবিক গতিতে খাদ্যগ্রহণকারীদের ছিল ৬.৫%। অপরদিকে যাঁরা ধীর গতিতে খাদ্য গ্রহণ করেন, মেটাবলিক সিন্ড্রোমে তাদের আক্রান্ত হবার আশংকা ২.৩%।
গবেষকরা পরামর্শ দেন- ধীরে খাবার খেতে, ভালো করে চিবিয়ে খাবার খেতে। এতে স্বাস্থ্য থাকবে নিরাপদ, হবে সুস্থতার সুরক্ষা। পেটে মেদ জমা বা স্থুলতার ঝুঁকি থাকবে না। এবং অনেক মাত্রায় কমে যাবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও অনেক কমে যাবে।
মেটাবলিক ডিজিজের কোনো সুনির্দিষ্ট উপসর্গ নেই, বোঝার উপায় রুটিন টেস্ট। রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড, গ্লকোজ, ইউরিক অ্যাসিড, কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে, রক্তচাপ স্বাভাবিকের থেকে বেশি হলে এবং কোমর চওড়া হয়ে ভুঁড়ি বাড়লেই মেটাবলিক সিনড্রোমের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের বক্তব্য হলো পেটের বাড়তি মেদ শুধু যে বাইরের দিকেই জমে থাকে তা নয়। পেটের ভেতরে চর্বি জমে আভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গে চাপ দেয় বলে প্যাংক্রিয়াস ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে বাড়তে ডায়াবেটিসের দিকে যায়।
যখন কোনো মানুষের ওজন স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি হয়, বেঢপ একটা কোমর আর ভুঁড়ি তৈরি হয়, তখনকার পরিস্থিতিটা এলার্মিং। এবার খাওয়ার গতিকে অবশ্যই ধীর করা উচিত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আরো আগেই কাজটি করা উচিত ছিল। বস্তুত, কোনো পরিস্থিতিতেই খাওয়ার গতিকে দ্রুত না করাই সর্বোচ্চ ভালো পন্থা।
আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রসর গবেষণা যখন এই পরামর্শ দিচ্ছে, তখন একজন মুসলিমের কাছে কথাগুলো নতুন মনে হবে না। যদি তিনি জেনে থাকেন রাসূল ﷺ-এর খাদ্যবিষয়ক সুন্নাহ। শুধু ধীর মনোযোগসহকারে খাবারের শিক্ষা ইসলাম দিয়েছে, তা নয়, বরং খাবারের পাত্রও মনোযোগ ও যত্নের সাথে পরিষ্কার করে খেতেন প্রিয় নবী ﷺ। খাদ্যের কোনো অংশকেই উপেক্ষা করা যাবে না। কারণ, বরকত এর কোন অংশে নিহিত, তার নিশ্চয়তা নেই। হযরত আনাস ইবনে মালিক রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূল ﷺ খাবারের পর আঙুল ও প্লেট চেটে খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় তিনি আরো বলেছেন খাদ্যের কোন অংশে বরকত নিহিত আছে তা তোমরা কেউ জানো না। [সহীহ মুসলিম, হাদীসক্রম : ২০৩৪]
খাবারের সময় নিঃশব্দে শুধু শুধু খেতে নেই। বরং একাধিক ব্যক্তি যখন খাচ্ছেন, খাবারের মধ্যখানে উত্তম কথাবার্তা জারি রাখা ইসলামের শিক্ষা। যা দ্রুত খেয়ে ফেলার প্রবণতা রোধ করবে।
খানা খাওয়ার সময় একেবারে চুপ থাকা মাকরূহ। এজন্য খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে পরস্পরে ভালো কথা আলোচনা করা। কিন্তু যে ধরনের কথা বা সংবাদে দুশ্চিন্তা বা ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে, তা খানার সময় বলা অনুচিত। [বুখারী শরীফ, হাদীসক্রম : ৫৩৭৬]
দুশ্চিন্তা বা ঘৃণাসহকারে খাদ্যগ্রহণ মানসিকতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, এটাও তাই ইসলাম লক্ষ রেখেছে আপন শিক্ষায়। খাবারের ব্যাপারটা এমন নয় যে, আপনার খুব তাড়া, যেনতেন প্রকারে খেয়ে নিলেন। ইসলাম খাবারকে এত আদনা বিষয় মনে করে না। ফলে একে সর্বাংশে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা হয়েছে। শিখিয়েছে- খাবারের আগে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া। [আবু দাউদ শরীফ, হাদীসক্রম : ৩৭৬১]
জুতা পরিহিত থাকলে জুতা খুলে খানা খাওয়া। [মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদীসক্রম : ৭১২৯]
দস্তরখানা বিছিয়ে খানা খাওয়া। [বুখারী শরীফ, হাদীসক্রম : ৫৩৮৬]
প্রথমে খানা তথা আল্লাহর নেয়ামতের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে বসা, তারপর দস্তরখান বিছানো। [বুখারী শরীফ, হাদীসক্রম : ৫৩৮৫, ৫৩৯৯]
খাদ্য সামনে আসার পরে খুব তাড়াহুড়ো করে দ্রুততাকামী মানুষ। এরকম মানুষের সংখ্যা এখন যেমন প্রচুর, অতীতেও কম ছিল না। প্রিয় নবীর সামনে একদা একজন খুব তাড়াহুড়ো করে খেলেন। নবীজি তাঁকে শেখালেন খাবারের ইসলামী পদ্ধতি। প্রথমে আল্লাহর নাম নিতে হবে। পরে ধীরে-সুস্থে খেতে হবে। ইমাম তিরমিযী রহ. হযরত আয়িশা রাযি. সূত্রে সহীহ সনদে বর্ণনা করেন যে, একদা নবী ﷺ খাদ্য গ্রহণ করছিলেন। সাথে ছিলেন তাঁর ছয় সাহাবী। এমন সময় একজন গ্রাম্য লোক এসে দুই লুকমায় সমস্ত খাবার সাবাড় করে ফেলল। নবীয়ে করীম ﷺ বললেন, ‘এই লোকটি যদি খাবার সময় বিসমিল্লাহ বলত তাহলে এই খানা সকলের জন্য যথেষ্ট হতো।’
হুযায়ফা রাযি. বলেন, ‘আমরা একবার খাদ্য গ্রহণ করার জন্য রাসূল ﷺ-এর সাথে উপস্থিত হলাম। তখন হঠাৎ একটি বালিকা এসে খাদ্যে হাত প্রবেশ করাতে লাগল। মনে হচ্ছিল- কে যেন তাকে খানার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। রাসূল ﷺ তার হাত ধরে ফেললেন। অতঃপর একটি গ্রাম্য লোক আসলে তিনি তার হাতও ধরে ফেললেন। অতঃপর তিনি বললেন- যে খাদ্যে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় না (বিসমিল্লাহ বলা হয় না), শয়তান সেই খাদ্যকে নিজের জন্য হালাল মনে করে।
নিয়ম হলো (উঁচু স্বরে) বিসমিল্লাহ পড়া। [বুখারী শরীফ, হাদীসক্রম : ৫৩৭৬]
বিসমিল্লাহ বলেও যাচ্ছেতাই প্রক্রিয়ায় খাবার শুরু করা যাবে না। বরং ডান হাত দিয়ে খাবার খেতে হবে। [বুখারী শরীফ, হাদীসক্রম : ৫৩৭৬; মুসলিম শরীফ, হাদীসক্রম : ২০২০]
খাদ্যের কোনো অংশ পড়ে গেলে উঠিয়ে (প্রয়োজনে পরিষ্কার করে) খাওয়া। [মুসলিম শরীফ, হাদীসক্রম : ২০৩৩]
হেলান দিয়ে বসে না খাওয়া। [বুখারী শরীফ, হাদীসক্রম : ৫৩৯৮]
খাদ্য খেতে হবে ধীরে ধীরে। খাবারের মধ্যে অঙুলি চেটে খাওয়ার শিক্ষা দিয়েছে ইসলাম। যা সুস্পষ্টভাবে তাড়াহুড়া করার পরিপন্থী। আবু হুরাইরা রাযি. বর্ণনা করেন, প্রিয় নবী ﷺ বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন খাবার খায়, সে যেন তার আঙুলগুলো চেটে খায়। কারণ, সে জানে না খাদ্যের কোন অংশে বরকত রয়েছে। [সহীহ মুসলিম, হাদীসক্রম : ৫১৩৫]
প্রিয় নবীজি ﷺ যখন খাবার খেতেন, উত্তমরূপে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতেন। খাবার যত বেশি চিবানো হবে, ততই তা উপাদেয়। এ খাদ্য পাকস্থলীতে চাপ ফেলে কম। সুস্থতার জন্য যা দরকার। চিবিয়ে খাওয়া দাঁতের জন্যও উপকারী। কারণ খাবার চিবানো দাঁতের এক্সারসাইজ! কিছু লোক মুখের এক অংশের দাঁত দিয়ে চিবান। তাদের মুখের অপর দিকের দাঁত চিবানো-অংশের দাঁতের দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
দ্রুত খাওয়া এবং যথেষ্ট পরিমাণে চিবিয়ে না খাওয়া খাদ্যকে গলা দিয়ে জোর করে নামায়। হজমের জন্য যা বিব্রতকর। বস্তুত, ভালো করে চিবানো হজমের অন্যতম একটি ধাপ। আর হজমের প্রতিটি ধাপই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধাপ সুসম্পন্ন না হলে হজমের পরবর্তী ধাপগুলো সমস্যাজনক হয়ে উঠবে।
খুব দ্রুত খেলে খাবার যথেষ্ট পরিমাণ সম্পন্ন হয়ে গেছে বা পেট ভরে গেছে, সেই সংকেত দেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না মস্তিষ্ক, ফলে বেশি পরিমাণে খাওয়া হয়ে যায়। যা পাকস্থলীকে শুধু বিপদে ও বিপাকে ফেলে না, বরং শরীরের জন্য বয়ে আনে হাজারো সমস্যা ও জটিলতা। নববী শিক্ষা তাই ধীরে-সুস্থে ও সচেতনভাবে চিবিয়ে খাওয়ার নিয়ম শিখিয়েছে। কারণ, খাদ্যের সময়ে আপনি দায়িত্বহীন থাকতে পারেন না। এতে অত্যাচার করা হয় প্রধানত নিজের প্রতি।