তাফসীরে সূরা বালাদ [আয়াতক্রম : ০১-১০]

আয়াত ও তরজমা

لَاۤ  اُقۡسِمُ  بِہٰذَا الۡبَلَدِ

১. আমি এই (মক্কা) নগরের শপথ করছি।

وَ اَنۡتَ حِلٌّۢ بِہٰذَا الۡبَلَدِ

২. আর (হে রাসূল!) এই নগরীতে আপনার প্রতি কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।

وَ وَالِدٍ وَّ  مَا وَلَدَ

৩. আমি শপথ করছি জনকের এবং যা সে জন্ম দেয়।

لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡ کَبَدٍ

৪. নিশ্চয় আমি মানুষকে কষ্টের মধ্যেই সৃষ্টি করেছি।

اَیَحۡسَبُ اَنۡ لَّنۡ یَّقۡدِرَ عَلَیۡہِ اَحَدٌ

৫. সে কি মনে করে যে, তার উপর কারো ক্ষমতা চলতে পারে না?

یَقُوۡلُ اَہۡلَکۡتُ مَالًا لُّبَدًا

৬. সে কি বলে, আমি প্রচুর পরিমাণে অর্থ ব্যয় করেছি?

اَیَحۡسَبُ اَنۡ  لَّمۡ  یَرَہٗۤ اَحَدٌ

৭. সে কি মনে করে, কেউ তাকে দেখতে পায়নি?

اَلَمۡ نَجۡعَلۡ لَّہٗ عَیۡنَیۡنِ

৮. আমি কি তার জন্যে সৃষ্টি করিনি দু চক্ষু?

وَ  لِسَانًا وَّ  شَفَتَیۡنِ

৯. আর জিহ্বা ও দু’ঠোঁট?

وَ ہَدَیۡنٰہُ النَّجۡدَیۡنِ

১০. এবং আমি তাকে কি দুটি পথই দেখাইনি?

নামকরণ ও ফযীলত

الْبَلَدِ শব্দের অর্থ- শহর, নগর ইত্যাদি। তবে এখানে শহর বলতে মক্কা নগরীকে বুঝানো হয়েছে। প্রথম আয়াতে উল্লিখিত الْبَلَدِ শব্দ থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।

সূরা বালাদকে লিপিবদ্ধ করে নবজাতক শিশুর দেহে বেঁধে দিলে সকল কষ্টদায়ক জীব-জন্তুর দংশন থেকে এবং আমাশয় রোগ থেকে সে হেফাজত থাকবে।

সংক্ষিপ্ত আলোচনা

এ ছোট্ট সূরাটিতে মানবজীবনের বেশ কিছু মৌলিক বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, যা সূরাটির বাচনভঙ্গির চাতুর্যে অত্যন্ত জোরালো ও প্রাণবন্ত। এই ছোট্ট সূরাটিতে সে মৌলিক বিষয়গুলোর এমন চমৎকার সমাবেশ ঘটেছে যা কুরআনে কারীম ছাড়া অন্য কিছুতে সম্ভব নয়। এই অসাধারণ বর্ণনাভঙ্গি হৃদয়ের সূক্ষ্ম তন্ত্রীগুলোতে অত্যন্ত গভীরভাবে সাড়া জাগায়। সূরাটি শুরু হয়েছে কঠিন শপথবাণীর সাথে। বলা হচ্ছে, ‘কসম এই মহানগরীর, যার এক সম্মানিত বাসিন্দা তুমি। কসম জন্মদাতা বাপের এবং কসম সন্তানের। অবশ্যই আমি (সর্বশক্তিমান আল্লাহ) সৃষ্টি করেছি মানুষকে কষ্টকর কাজের কর্মী হিসাবে।’

মহানগরী বলতে এখানে মক্কা শরীফকে বুঝানো হয়েছে, যেখানে আল্লাহর সম্মানিত ঘর বর্তমান। পৃথিবীতে মানুষের জন্য প্রথম এই ঘরটি তৈরি করা হয়েছে, যা গোটা মানবমণ্ডলীর আশ্রয়স্থল এবং নিরাপত্তা বিধানকারী। এখানে এসে তারা তাদের যাবতীয় অস্ত্র সংবরণ করে, ঝগড়া-বিবাদ ভুলে যায়। ভুলে যায় শত্রুতার কথা এবং একে অপরের সাথে শান্তিপূর্ণ হৃদয় নিয়ে মিলিত হয়। একজন আর এক জনের জন্য সশ্রদ্ধ ও নিবেদিত। এমনি করে এ ঘরটি এবং এ ভূমিতে অবস্থিত গাছপালা, পাখি এবং যা কিছু আছে- সবই নিরাপদ। তারপর আরো রয়েছে এর মধ্যে ইসমাঈল আ.-এর পিতা ইবরাহীম আ.-এর ঘর। তিনি গোটা আরব এবং সকল মুসলমানের পিতা।

তাফসীর

আল্লাহ তাআলা মক্কা নগরীর শপথ করে বলছেন- ‘(হে রাসূল!) এই নগরীতে আপনার প্রতি কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।’

এখানকার ‘হিললুন’ অর্থ মুস্তাহিল (বৈধ), হালাল মনে করা। অর্থাৎ- হে আমার নবী! আপনাকে এ শহর থেকে বের করে দেওয়াকে আপনার শত্রুরা হালাল মনে করে, যেমন হালাল মনে করা হয় হেরেম শরীফের বাইরে শিকার করাকে। অথবা এখানে যেন মক্কার মুশরিকদেরকে তিরস্কার করা হয়েছে এই বলে যে, হে আমার নবী! আপনাকে বন্দী, হত্যা, অথবা দেশান্তর করা তাদের বিবেচনায় বৈধ। কথাটির মর্মার্থ এরকমও করা হয়েছে যে, হে আমার রাসূল! অন্য সকলের জন্য নিষিদ্ধ হলেও আপনার জন্য এই নগরীতে কাউকে বন্দী অথবা হত্যা করা বৈধ। এরকম ব্যাখ্যা গ্রহণ করলে বুঝতে হবে, বক্তব্যটি একটি ভবিষ্যদ্বাণী ও একটি অঙ্গীকার। এভাবে বক্তব্যটি দাঁড়ায়- হে আমার প্রত্যাদেশবাহক! আমি এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে, বিজয়ী আমি আপনাকে করবই। সেদিন বেশি দূরে নয়। যখন মক্কা ও মক্কাবাসীসহ সমগ্র আরব ভূখণ্ডে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে কেবল আপনার। তখন কিছুকালের জন্য এই শহরে রক্তপাত ঘটানো হবে আপনার জন্য বৈধ। বলা বাহুল্য, এ রকমই ঘটেছিল। মক্কাবিজয়ের দিবসে তিনি বিজয়ীর বেশে মক্কায় প্রবেশ করেছিলেন। নির্দেশ দিয়েছিলেন, আবদুল্লাহ ইবনে হানযালাকে বধ করতে হবে, যেখানে তাকে পাওয়া যাবে সেখানেই। সে অঁাকড়ে ধরেছিল কাবা গৃহের গিলাফ। সেখান থেকে তাকে টেনে এনে হত্যা করেছিলেন হযরত মাকীস ইবনে খাবাবা ও তাঁর সঙ্গীগণ। তিনি ﷺ তখন বলেছিলেন, আকাশ-পৃথিবী সৃষ্টির দিবস থেকেই আল্লাহ এই নগরীকে করেছেন মহাসম্মানিত। মহাপ্রলয় পর্যন্ত বজায় থাকবে এই নগরীর মহামর্যাদা। এখানে রক্তপাত নিষিদ্ধ। আমার পূর্বে এখানে রক্তপাত ঘটানো বৈধ ছিল না। বৈধ থাকবে না আমার পরেও। আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে কেবল দিবসের একাংশের জন্য।

বংশানুক্রমিক সৃষ্টিতত্ত্ব

এ প্রসঙ্গে এ ব্যাখ্যাটিই সম্ভবত বেশি উপযোগী। ‘পিতা ও সন্তানের কসম’- এ কথা দ্বারা বিশেষভাবে ইবরাহীম আ. ও ইসমাঈল আ.-এর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, আর এই শহর, এখানের অধিবাসী, নবী ও এ ঘরের প্রতিষ্ঠাতা এবং যাকে তিনি জন্ম দিয়েছেন- এ সবই ইবরাহীম আ. সম্পর্কে বলা হয়েছে বলে মনে হয়। কিন্তু তার অর্থ এ নয় যে, আর কোনো ব্যাখ্যা এখানে হতে পারে না। পিতা ও পুত্রের কথা বলতে মানবসাধারণের পিতা-পুত্রের সম্পর্কও বুঝানো হতে পারে। যাদের মাধ্যমে সৃষ্টিপ্রক্রিয়া চালু রয়েছে। এই সূরার ভূমিকা হিসাবে মানব সৃষ্টির রহস্য তুলে ধরা হয়েছে এবং এটাই সূরার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।

আল্লাহ তাআলা পিতা ও পুত্রের কসম খেয়েছেন যাতে করে সৃষ্টি জগতের বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে এবং মানব সৃষ্টির বিভিন্ন স্তরের প্রতি আমাদের দৃষ্টি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয় এবং আমরা খেয়াল করে দেখি যে, কিভাবে মানুষ পৃথিবীতে এলো এবং কোন কোন পর্যায় অতিক্রম করে আজ নিজেকে সে উন্নত জীব বলে ভাবতে পারছে এবং কিভাবে তার পরিসমাপ্তি ঘটবে।

যখন গাছপালার জন্ম ও বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সম্পর্কে আপনি চিন্তা করবেন, তখন দেখবেন কেমন করে বীজ মাটিতে পড়ার পর অংকুরিত হয়। তারপর বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে সে অংকুর বেড়ে ওঠে। তাকে প্রাকৃতিক কত দুর্যোগের মুকাবিলা করতে হয় এবং বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য আশপাশের সবকিছু থেকে কী কঠিনভাবে তার খাবার সংগ্রহ করা দরকার হয়। এভাবে সে শেষ পর্যন্ত পত্রপল্লব সজ্জিত শাখা-প্রশাখা সংবলিত সুদৃঢ় গাছে পরিণত হয়। তখন সে আরও একটি বা একাধিক বীজ প্রদানে সক্ষম হয় যা তারই গাছপালার জন্ম ও বিস্তার দান করে এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নিজেদের সঠিক ভূমিকা পালন করে। এসব বিবর্তনের দিকে যখন আপনি দৃষ্টিপাত করবেন, চিন্তা করবেন সৃষ্টির এই বৈচিত্র সম্পর্কে এবং আরও চিন্তা করবেন এসব গাছপালার ঊর্ধের জিনিস জীব-জন্তু ও মানব সৃষ্টি সম্পর্কে, তখন আপনার সামনে ভেসে উঠবে সব থেকে বৈচিত্র্যময় সৃষ্টি, পিতা ও পুত্রের জন্ম রহস্য, যা সৃষ্টিকুলে সংঘটিত করেছে সব থেকে বড় বিপ্লব, যার জন্য প্রয়োজন মহা বিজ্ঞানময় এক দক্ষ পরিকল্পনা, যাতে করে এ মহা সৃষ্টিকে টিকিয়ে রাখা যায় এবং যাতে বিশ্ব প্রকৃতির প্রবৃদ্ধিতে নিত্যনতুন সৌন্দর্যের সংযোজন ও বিকাশ ঘটে।

পরের আয়াতে বলা হয়েছে, ‘(এদের সৃষ্টির কলাকৌশল ও ইতিহাস থেকে সহজেই তোমরা অনুধাবন করতে পারো যে,) আমি প্রতিটি মানবশিশুকে এক কঠোর পরিশ্রম (ও সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা) দিয়ে পয়দা করেছি।’ অর্থাৎ সূচনা থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত মানুষ কষ্ট আর দুঃখের মধ্যে নিপতিত রয়েছে। তাকে সইতে হয় নানা রকম কঠোরতা। কখনো ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, কখনো আক্রান্ত হয় দুঃখে, কখনো তাকে পড়তে হয় চিন্তায়। হয়তো মানুষের গোটা জীবনে এমন একটা মুহূর্তও আসে না, যখন কোনো মানুষ সব রকম বিপদাপদ, সব রকম চিন্তা আর শ্রম থেকে মুক্ত সম্পূর্ণ নিশ্চিন্তের জীবন যাপন করতে পারে। আসলে মানুষের জন্মগত গঠনই এমন যে, সে এসব চিন্তা আর ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে পারে না। আদম আর বনী আদমের অবস্থা প্রত্যক্ষ করাই এ কথার স্পষ্ট প্রমাণ। আর মক্কার মতো প্রস্তরময় অঞ্চলের জীবন, বিশেষ করে এমন এক সময়, যখন সৃষ্টির সেরা মানব সেখানে কঠোর অত্যাচার নির্যাতন আর তীব্র যুলুম-নির্যাতনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। উপরন্তু, আল্লাহ তাআলার বক্তব্যও এর উজ্জ্বল সাক্ষী।

ক্ষমতার অপব্যবহার ছেড়ে বিনয় অবলম্বন

‘(এ সত্ত্বেও এই নির্বোধ) মানুষটি কিভাবে মনে করে যে, তার ওপর কারোরই কোনো ক্ষমতা চলে না।’ অর্থাৎ- মানুষকে যেসব কষ্ট-ক্লেশ আর বিপদাপদের পথ অতিক্রম করতে হচ্ছিল, তার দাবি তো ছিল এই যে, তার মধ্যে বিনয় আর অক্ষমতার ভাব সৃষ্টি হবে এবং সে নিজেকে আল্লাহর হুকুম আর ফয়সালার হাতে আবদ্ধ মনে করে আল্লাহর নির্দেশ আর সন্তুষ্টির বাধ্য-অনুগত হয়ে থাকবে এবং সব সময় নিজের অক্ষমতা আর বিনয়কেই সম্মুখে রাখবে। কিন্তু তার অবস্থা হচ্ছে এই যে, সে একেবারেই ভুলের মধ্যে নিপতিত রয়েছে। সে কি মনে করে বসে আছে যে, তাকে কাবু করার মতো কোনো সত্তা নেই? এমন কোনো সত্তা কি নেই, যিনি তার বিদ্রোহ-অবাধ্যতায় তাকে শাস্তি দিতে সক্ষম?

‘(আবার আমার দেওয়া সম্পদের বাহাদুরী দেখিয়ে) সে বলে, আমি তো প্রচুর সম্পদ উড়িয়ে দিয়েছি।’

অর্থাৎ রাসূল ﷺ-এর শত্রুতা, ইসলামের বিরোধিতা আর পাপাচার কর্মে নির্বিবাদে অর্থ ব্যয়কে সে বুদ্ধিমত্তা মনে করে এবং তাকে আরো বাড়িয়ে রং ছড়িয়ে গর্বভরে বলে যে, আমি এত বিপুল অর্থ ব্যয় করেছি। এর পরও কি আমার মুকাবিলায় সফল হতে পারবে? কিন্তু সম্মুখে অগ্রসর হয়ে টের পাবে যে, এসব ব্যয় করা অর্থই বরবাদে গেছে। বরং উল্টো তা-ই হয়েছে তার জীবনের বোঝা।

মানব শরীরে আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ

যুক্তির এই জগতে বিচরণের জন্য আল্লাহ তাআলা সাধারণভাবে মানুষকে জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়েছেন। তাকিয়ে দেখুন- এক একটি করে দেওয়া আল্লাহ তাআলার নেয়ামতগুলোর দিকে। তিনি বানিয়ে দিয়েছেন তার জন্য (কী সুন্দর করে) মহামূল্যবান দুটি চোখ। যার নির্মাণ-কৌশল কত জটিল ও নিপুণ, যার দৃষ্টিশক্তি কত আশ্চর্যজনক! তিনি কথা বলার শক্তি দিয়েছেন, যার দ্বারা কত সুন্দরভাবে সে মনের ভাব প্রকাশ করে। তাকে অন্য জীব থেকে পৃথক করেছেন, আর এই কাজের জন্য তাকে দিয়েছেন (বহিরাঙ্গ) জিহ্বা ও দুটি ঠোঁট। তারপর দিয়েছেন ভালো ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার বিশেষ যোগ্যতা ও শক্তি। সঠিক ও বেঠিক পথের মধ্যে পার্থক্য জানা, বুঝা ও বাছাই করার সক্ষমতা ও স্বাধীনতা, যাতে করে এ দুয়ের মধ্যে যেটা খুশি সে গ্রহণ করতে পারে। আরও দিয়েছেন তাকে সত্য ও অসত্য পথের খবর। এরশাদ হচ্ছে, ‘এবং আমি (আল্লাহ তাআলা) তাকে দুটি পথ দেখিয়েছি যাতে দুটির যে কোনো একটা সে খুশিমতো গ্রহণ করতে পারে।’ এই বিষয়গুলো মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিতে পরবর্তী আয়াতে (৮-১০) এরশাদ হচ্ছে- ‘আমি কি তার জন্যে সৃষ্টি করিনি দু চক্ষু, জিহ্বা ও দু’ঠোঁট? এবং আমি তাকে কি দুটি পথই দেখাইনি?’

সত্য ও সুন্দরের প্রহরায় ৪৮ বছর

প্রতিষ্ঠাতা : শায়খ আল্লামা লুৎফুর রহমান বর্ণভী রহ.
নিবন্ধন নম্বর : চ-৪৭৩/০৫

সত্য ও সুন্দরের প্রহরায় ৪৮ বছর

প্রতিষ্ঠাতা : শায়খ আল্লামা লুৎফুর রহমান বর্ণভী রহ.
নিবন্ধন নম্বর : চ-৪৭৩/০৫

কপিরাইট © ২০২৪ | মাসিক হেফাজতে ইসলাম, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলামের মুখপত্র। Developed By Shabaka IT