তাফসীরে সূরা আ’লা [আয়াত-ক্রম : ১১-১৯]

 

وَيَتَجَنَّبُهَا ٱلْأَشْقَى

(১১) আর উহা উপেক্ষা করবে যে নিতান্ত হতভাগ্য,

ٱلَّذِى يَصْلَى ٱلنَّارَ ٱلْكُبْرَىٰ

(১২) যে মহাঅগ্নিতে প্রবেশ করবে

ثُمَّ لَا يَمُوتُ فِيهَا وَلَا يَحْيَىٰ

(১৩) অতঃপর সেথায় সে মরবেও না, বাঁচবেও না।

قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ

(১৪) নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে-যে পবিত্রতা অর্জন করে

وَذَكَرَ ٱسْمَ رَبِّهِۦ فَصَلَّىٰ

(১৫) এবং তাহার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।

بَلْ تُؤْثِرُونَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا

(১৬) কিন্তু তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দাও

وَٱلْـَٔاخِرَةُ خَيْرٌۭ وَأَبْقَىٰٓ

(১৭) অথচ আখিরাতই উৎকৃষ্টতর এবং স্থায়ী।

إِنَّ هَـٰذَا لَفِى ٱلصُّحُفِ ٱلْأُولَىٰ

(১৮) ইহা তো আছে পূর্ববর্তী গ্রন্থে।

صُحُفِ إِبْرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ

(১৯) ইবরাহীম ও মূসার গ্রন্থে।

সারসংক্ষেপ

সূরা আ’লার ১১ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতে পরকাল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ যারা দাওয়াত গ্রহণের মধ্য দিয়ে কুফর-শিরক ও মন্দ স্বভাব বর্জন করেছে এবং সঠিক আকীদা-বিশ্বাস লালন করে নিজেদেরকে পবিত্র করেছে পরকালে তাঁরাই সফলকাম। আর যারা পরকালীন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে কল্পকাহিনী মনে করে পার্থিব জীবনকে আখিরাতের উপর প্রধান্য দিয়েছে, পরকালে তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নামের মহাঅগ্নি। পরিশেষে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, এসব বিষয় নতুন কিছু নয় বরং যুগ যুগ ধরে আমি মানুষের কাছে এসব বিষয়ের বর্ণনা দিয়েছি। হাজার বছর পূর্বে ইবরাহীম ও মুসা আ.-এর কাছে প্রেরিত সহীফাতে এসব বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।

আখিরাতে হতভাগাদের পরিণতি

আল্লাহ তাআলা ‘وَيَتَجَنَّبُهَا الْأَشْقَي’ বলে সেই পরিণতির কথা বিবৃত করেছেন, যা হতভাগাদের জন্য অপেক্ষমাণ। অর্থাৎ যারা দ্বীন ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তারাই হতভাগা, তাদের জন্যই জাহান্নাম। কুরআনের অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর যারা হতভাগা তারা থাকবে অগ্নিতে এবং সেথায় তাদের জন্য থাকবে চিৎকার ও আর্তনাদ, সেথায় তারা স্থায়ী হবে যতদিন আকাশসমূহ ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক তাই করেন যা তিনি ইচ্ছা করেন। পক্ষান্ত‎রে যারা ভাগ্যবান তাঁরা থাকবে জান্নাতে সেথায় তাঁরা স্থায়ী হবে, যতদিন আকাশসমূহ ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; এটা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।’ (সূরা হূদ, আয়াতক্রম : ১০৬-১০৮)

জাহান্নামের ‘মহাঅগ্নি’ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের এ আগুন জাহান্নামের আগুনের ৭০ ভাগের এক ভাগ মাত্র।’ (সহীহ বুখারী, হাদীসক্রম : ৩২৬৫) অর্থাৎ দুনিয়ার আগুনের চেয়ে তা ৬৯ গুণ বেশি উত্তাপের অধিকারী এবং সে কারণে এখানে জাহান্নামের আগুনকে মহাঅগ্নি বলা হয়েছে। সুতরাং এমন আগুনে যাতে যেতে না হয় সেজন্য সাধ্যমতো নেক আমল করতে হবে। সত্য অস্বীকারকারী হতাভাগারা জাহান্নামে মারাও যাবে না, জীবিতও থাকে না। মারা গেলে তো শাস্তি থেকে বেঁচে গেল, আর ভালোভাবে জীবিত থাকলে তো শাস্তি পেল না! মোটকথা, সবর্দা আযাবে হাবুডুবু খাবে।

আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব ও তাৎপর্য

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ وَذَكَرَ ٱسْمَ رَبِّهِۦ فَصَلَّىٰ-নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে, যে পবিত্রতা অর্জন করে এবং তাঁর প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।’

উল্লিখিত আয়াতে ‘فلاح’ শব্দের অভিধানিক অর্থ হলো, সফলতা, অবস্থার সংশোধন বা সংস্কার, অস্তিত্ব, মুক্তি, নিষ্কৃতি ইত্যাদি। মৌলিকভাবে ‘فلاح’ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ‘جميع خير الدين والدنيا’-অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাতের প্রভূত কল্যাণ। আর ‘مَن تَزَكَّىٰ’-এর অর্থ হলো, যে শোধিত হয়েছে বা পবিত্রতা অর্জন করেছে। পবিত্রতা অর্জন বা আত্মশুদ্ধি ইবাদাত কবুলের পূর্বশর্ত। ‘مَن تَزَكَّىٰ’ থেকে তিন ধরনের পবিত্রতা সাফল্য লাভের চাবিকাঠি বলে প্রতীয়মান হয়-

১. আভ্যন্তরীণ পবিত্রতা : অর্থাৎ অংশীবাদিতা ও পৌত্তলিকতার কদর্যতা থেকে হৃদয়কে পবিত্র রাখা। মুক্ত থাকা প্রবৃত্তির প্ররোচনা থেকে এবং আল্লাহর যিকিরের ব্যাপারে গাফলিত বা ঔদাসীন্য থেকে।

২. বাহ্যিক পবিত্রতা : অর্থাৎ হালাল উপার্জন ও যাকাত প্রদানের মাধ্যমে সম্পদের পরিশুদ্ধায়ন।

৩. দৈহিক পবিত্রতা : অর্থাৎ পরিধেয় ও দেহকে নাপাক বস্তুসমূহ থেকে মুক্ত করণ ইত্যাদি।

এই তিন ধরনের পবিত্রতা অর্জন করতে পারবে যে, সে-ই লাভ করবে সাফল্য।

এরপর বলা হয়েছে-‘এবং তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।’ হযরত জাবির ইবনু আবদিল্লাহ রাদি. বর্ণনা করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় সাফল্য লাভ করে সে, যে বিশুদ্ধ হয়, সাক্ষ্য দেয়, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেই এবং আমাকে স্বীকার করে রাসূল বলে। আল্লাহর নাম স্মরণ করে এবং যত্নের সঙ্গে সম্পাদন করে পাঁচ ওয়াক্তের নামায।’

শায়খ মওলানা ইয়াকুব কারখী রাহ. বলেছেন, আলোচ্য আয়াতে রয়েছে আধাত্ম্য পথচারীর ক্রমময় বিভিন্ন স্তরের প্রতি ইঙ্গিত। যেমন-

১. ‘قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ’ দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে তাওবা ও আত্মশুদ্ধির।

২. যবানী, কলবী, রূহানী ও খফি (গোপন) যিকিরে নিমগ্নতার কথা বলা হয়েছে ‘وَذَكَرَ ٱسْمَ رَبِّهِ’ দ্বারা।

৩. আর ‘فَصَلَّىٰ’ দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে মুশাহাদার (দর্শনের) প্রতি। কেননা, নামায হচ্ছে মুমিনগণের মিরাজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রকমও বলেছেন যে, ‘নামায আমার চোখের শান্তি।’

হযরত মুজাদ্দিদে আলফে সানি রহ. এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘এখানে “تَزَكَّىٰ” এবং “ذَكَرَ” শব্দদ্বয়ের “ওয়াও” যোজক দ্বারা সংযুক্তি এবং “فَصَلَّىٰ”-এর “ফা” যোজকটির ব্যবহার যিকিরের বিশেষ পদ্ধতির প্রতি ইঙ্গিতার্থক।’ অর্থাৎ আত্মশুদ্ধির প্রাথমিক পথিকদের জন্য যিকির হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে ‘ইসমে জাত’ (আল্লাহ) অথবা ‘নফি ইসবাত’ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ)। তিনি আরো বলেছেন, ‘আত্মশুদ্ধি ব্যতিরেকে নামাযের পুরোপুরি কল্যাণ অর্জন সম্ভব নয়। পরমতম সত্তার জ্যোতিচ্ছটা এবং তাঁর নৈকট্যের দিকে উন্নতির জন্য নামাযই মূল মাধ্যম। সুতরাং নামায যেমন অত্যাবশ্যক, তেমনি অত্যাবশ্যক আত্মশুদ্ধিও।

আত্মশুদ্ধির জন্য আবশ্যকীয় বিষয়াদি

১. কুফর ও শিরকী আকীদা-বিশ্বাস বর্জন।

২. বাহ্যিক পবিত্রতা অর্জন।

৩. যাকাত প্রদানের মাধ্যমে সহায়-সম্পত্তির পবিত্রকরণ।

৪. আখলাকে রাযীলা তথা মন্দ স্বভাব-চরিত্র বর্জন।

৫. সকল প্রকার পাপকর্ম বর্জন।

৬. সর্বদা আল্লাহ তাআলার যিকির করা।

দুনিয়ার মোহ ত্যাগ ও আখিরাতের প্রতি উৎসাহীকরণ

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দাও, অথচ আখিরাতই উৎকৃষ্টতর এবং স্থায়ী।’ দুনিয়ার জীবনকে অগ্রাধিকার দেয়াই হলো সকল আপদের মূল। এই অগ্রাধিকার থেকে উৎপত্তি হয় কুরআনকে উপেক্ষা করার মনোভাব। কেননা, এই কুরআন মানুষকে আখিরাতের হিসাব-নিকাশকে অগ্রাধিকার দেয়ার দাবি জানায়। অথচ তারা দুনিয়াকে অগ্রাধিকার দেয় এবং দুনিয়াকেই কামনা করে। দুনিয়াকে দুনিয়া নামে নামকরণ কোনো কাকতালীয় ব্যাপার নয়। এর শাব্দিক অর্থ যেমন নিচু ও নিকৃষ্ট, আসলেও তা তাই। দুনিয়ার আর এক অর্থ ত্বরিত সংঘটিত।

ইমাম আহমাদ রহ. আম্মাজান আয়িশা রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘দুনিয়া তার ঘর, আখিরাতে যার কোনো ঘর নেই; তার সম্পদ (আখিরাতে) যার কোনো সম্পদ নেই, আর এই দুনিয়ার জন্য সঞ্চয় সেই করে, যার কোনো বুদ্ধি নেই।’

‘আখিরাত শ্রেষ্ঠ ও চিরস্থায়ী।’ অর্থাৎ আখিরাতের জীবন মানের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ এবং মেয়াদের দিক দিয়ে চিরস্থায়ী। বস্তুত এই বাস্তবতার আলোকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, আখিরাতের ওপর দুনিয়াকে অগ্রাধিকার দান বোকামি এবং নিকৃষ্ট মূল্যায়ন। কোনো বুদ্ধিমান দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন লোক এমন কাজ করতে পারে না। হযরত আবূ মূসা আশআরী রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াকে ভালোবাসল, সে তার আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো, আর যে ব্যক্তি তার আখিরাতকে ভালোবাসল, সে তার দুনিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হলো। সুতরাং ধ্বংসশীল অস্থায়ী জীবনের উপর তোমরা স্থায়ী জীবনকে প্রাধান্য দাও।

হযরত ইবরাহীম ও মূসা আ.এর সহীফা

দাওয়াতের প্রাচীনত্ব, এর উৎসের আভিজাত্য, এর কালোত্তীর্ণ ও শাশ্বত মৌলিকত্ব এবং স্থান ও কালের ব্যবধান সত্ত্বেও এর মূলের একত্বের কথা উল্লেখ করতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় এ বক্তব্য পূর্ববর্তী গ্রন্থাবলিতেও রয়েছে, ইবরাহীম ও মূসার গ্রন্থালিতে।’ অর্থাৎ ইসলামের শাশ্বত ও সুমহান আকীদা সংক্রান্ত যে বক্তব্য এই সূরায় রয়েছে, তা পূর্বতন গ্রন্থাবলিতে এবং ইবরাহীম ও মূসার গ্রন্থাবলিতেও আছে। সত্য যখন এক, আকীদা আদর্শ ও তত্ত্ব যখন এক, তখন তা স্বতস্ফূর্তভাবেই সাক্ষ্য দেয় যে, তার উৎসও এক এবং মানুষের নিকট রাসূল প্রেরণের সিদ্ধান্তও এক। মূলত এ সত্য একই মহাসত্য, অকাট্য সত্য এবং এর উৎসও একই। নতুন নতুন প্রয়োজন ও পরিবর্তিত পরিস্থিতির আলোকে তার বিস্তারিত রূপ ও খুঁটিনাটি নীতিতে পার্থক্য থাকে। কিন্তু তা সেই একই মূলে গিয়ে মিলিত এবং একই উৎস থেকে নির্গত হয়। সে উৎস হচ্ছে-শ্রেষ্ঠতম প্রভু যিনি সৃষ্টিকর্তা, ভারসাম্যদানকারী, পথনির্দেশদানকারী ও ভাগ্য নিরূপণকারী ও পরিকল্পনাকারী।

ইবরাহীমী সহীফার বিষয়বস্তু

হযরত আবু যর গিফারী রাযি. রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘ইবরাহীম আ.-এর সহীফা কীরূপ ছিল?’ জবাবে নবীজি বলেন, ‘এসব সহীফায় শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত বর্ণিত হয়েছিল। তন্মধ্যে এক দৃষ্টান্তে অত্যাচারী বাদশাহকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে-“হে ভূঁইফোঁড় গর্বিত বাদশাহ, আমি তোমাকে ধনৈশ্বর্য স্তুপীকৃত করার জন্য রাজত্ব দান করিনি বরং আমি তোমাকে এ জন্য শাসনক্ষমতা অর্পণ করেছি, যাতে তুমি উৎপীড়িতের বদদুআ আমার পর্যন্ত পৌঁছতে না দাও। কেননা, আমার আইন এই যে, আমি উৎপীড়িতের দুআ প্রত্যাখ্যান করি না, যদিও তা কাফিরের মুখ থেকে হয়।” অপর এক দৃষ্টান্তে সাধারণ মানুষকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে-বুদ্ধিমানের কাজ হলো, নিজের সময়কে তিন ভাগে বিভক্ত করা। একভাগ তার পালনকর্তার ইবাদাত ও তাঁর সাথে মুনাজাতের; একভাগ আত্মসমালোচনার এবং আল্লাহ তাআলার মহাশক্তি ও কারিগরি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করার; আর একভাগ জীবিকা উপার্জনের ও স্বাভাবিক প্রয়োজনাদি মেটানোর।” আরও বলা হয়েছে, “বুদ্ধিমান ব্যক্তির জন্য অপরিহার্য এই যে, সে সমসাময়িক পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকবে, উদ্দিষ্ট কাজে নিয়োজিত থাকবে এবং জিহ্বার হেফাজত করবে। যে ব্যক্তি নিজের কথাকেও নিজের কর্ম বলে মনে করবে, তার কথা খুবই কম হবে এবং কেবল জরুরি বিষয়ে সীমিত থাকবে।”

মূসা আ.এর সহীফার বিষয়বস্তু

অতঃপর আবু যর রাযি. হযরত মূসা আ. -এর সহীফা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘এসব সহীফায় কেবল শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুই ছিল। তন্মধ্যে কয়েকটি বাক্য হলো-

*“আমি সে ব্যক্তির ব্যাপারে বিস্ময়বোধ করি, যে মৃত্যুর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে, অতঃপর সে কিরূপে আনন্দিত থাকে!”

*“আমি সে ব্যক্তির ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করি যে বিধিলিপি বিশ্বাস করে, অতঃপর সে কীরূপে অপারগ হতোদ্যম ও চিন্তাযুক্ত হয়!”

*“আমি সে ব্যক্তির ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করি, যে দুনিয়া, দুনিয়ার পরিবর্তনাদি ও মানুষের উত্থান-পতন দেখে, সে কেমন করে দুনিয়া নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকে!”

*“আমি সে ব্যক্তির বাপারে আশ্চর্যবোধ করি, যে পরকালের হিসাব-নিকাশে বিশ্বাসী, অতঃপর সে কীরূপে কর্ম পরিত্যাগ করে বসে থাকে!”’

হযরত আবূ যর (রাযি.) প্রশ্ন করলেন, ‘এসব সহীফার কোনো বিষয়বস্তু আপনার কাছে আগত ওহীর মধ্যেও আছে কী?’ নবীজি বললেন, ‘হে আবূ যর, এ আয়াতগুলো সূরার শেষ পর্যন্ত পাঠ করো-

قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ وَذَكَرَ ٱسْمَ رَبِّهِۦ فَصَلَّىٰ (কুরতুবী)

সত্য ও সুন্দরের প্রহরায় ৪৮ বছর

প্রতিষ্ঠাতা : শায়খ আল্লামা লুৎফুর রহমান বর্ণভী রহ.
নিবন্ধন নম্বর : চ-৪৭৩/০৫

সত্য ও সুন্দরের প্রহরায় ৪৮ বছর

প্রতিষ্ঠাতা : শায়খ আল্লামা লুৎফুর রহমান বর্ণভী রহ.
নিবন্ধন নম্বর : চ-৪৭৩/০৫

কপিরাইট © ২০২৪ | মাসিক হেফাজতে ইসলাম, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলামের মুখপত্র। Developed By Shabaka IT